স্টাফ রিপোর্টার,
[ ৭ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি.]
আজ ৭ ডিসেম্বর, শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস। দিবসটি শেরপুর জেলা পুলিশ কর্তৃক যথাযথ মর্যাদা ও পূর্ণ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন উপলক্ষে সকাল ১০টায় শেরপুর জেলা শহরের চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সুসজ্জিত পুলিশ বাদকদলের ব্যান্ডের তালে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালি শেষে জেলা শহরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জনাব মোঃ কামরুজ্জামান বিপিএম, পুলিশ সুপার, শেরপুর।
এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আতিউর রহমান আতিক, এমপি; জনাব সাহেলা আক্তার, জেলা প্রশাসক, শেরপুর; জনাব এ.এস.এম নুরুল ইসলাম হিরো, শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার, জনাব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, মেয়র, শেরপুর পৌরসভার সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের সামনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শেরপুর মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনাব সাহেলা আক্তার, জেলা প্রশাসক, শেরপুর এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আতিউর রহমান আতিক, এমপি এবং সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ কামরুজ্জামান বিপিএম, পুলিশ সুপার, শেরপুর। এসময় জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধাগণসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথিগণ ১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় শেরপুরে পাক হানাদারদের হত্যাযজ্ঞ ঘটনাবলী এবং পরবর্তী ৭ ডিসেম্বর শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা শেষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গ সহ মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। এদিন ভারতীয় সেনা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ও মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরকে হানাদারমুক্ত বলে ঘোষণা দেন। এ সংবর্ধনা সভায় মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে শহরের পাড়া মহল্লায়ও চলে খণ্ড খন্ড আনন্দ মিছিল। মুক্তির আনন্দে জয় বাংলা স্লোগানে ফেটে পড়েন গোটা জেলার মানুষ।