কাজী নজরুল ইসলাম সেলিম গাইবান্ধা থেকেঃ
মানুষ একে অপরের প্রতি ভালবাসা আর সৌহার্দ্য প্রকাশ করার ভাষা ও প্রতীক সৃষ্টি আদি কাল থেকে। কখনো কখনো তা প্রকাশ করে ভাষায় আবার কখনো কখনো মাতৃভাষার অক্ষর দিয়ে। ভালবাসা জানিয়েছে আপন ও প্রিয় মানুষকে। বাহক হিসেবে ছিল শিকারী পায়রা অথবা কোন মানুষের মাধ্যমে। রাজা-বাদশার রাজত্ব কালে খবরা-খবর নিতো বা আদান-প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট লোক কাজ করত। চিঠি অথবা কার্ডের মাধ্যমে প্রকাশ করে ভালবাসার না বলা কথাগুলো। অনেকে সাদা কাগজে কেউ বা লাল, নীল,গোলাপি নানান রঙ্গের কাগজের মোড়কে মোড়ানো ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যম ছিল ঈদ কার্ড। সবার কাছে পরিচিত ঈদ কার্ড। সব শ্রেনীর মানুষ বা সব বয়সের মানুষ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ব্যবহার করত ঈদের কার্ড। এখন তা আর লাগে না। আধুনিক যুগে সব কিছু পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে ভালবাসার রং ও প্রকাশের ধরন। তরুণ-তরুণীরাই বেশী ব্যবহার করত ঈদ কার্ড। এখন ঈদ কার্ড ব্যবহার বিলুপ্ত। ঈদ আসলেই শহরের কার্ডের বাজার বসত। শহরের বিভিন্ন স্থানে বসতো অনেক ঈদ কার্ডের দোকান। দোকানিরা সাজিয়ে রাখতেন বিভিন্ন রং-বেরঙের ঐ সব ঈদ কার্ড। বাজারে থাকতো নানান রঙ্গের আার বাহারি ডিজাইনের ঈদ কার্ড। এসব কার্ডে নকশাও চমৎকার। বিভিন্ন কার্ডে ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর ভাষা কোনটাতে ইংরেজি কোনটাতে বাংলায় থাকতো। শুধু কি শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ নয়। কেউবা কবিতার মাধ্যমে, ছড়ার মাধ্যমে, অনেকে আবার বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ঈদ সম্পর্কে উক্তি দিয়ে প্রকাশ করতো। বাজারে থাকতো নানান রঙ্গে ঈদ কার্ড তাতে সুন্দর করে নানা ছন্দ, কবিতার লাইন লিখে আপন জন, বন্ধু- বান্ধবী বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে দিত। ঈদ আসলেই কার্ড কেনার ধুম পড়তো। এখন আর দেখা যায় না। কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা ও দাওয়াত দেওয়া হতো। কালের আবর্ত এখন পরিবর্তন হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ডিজাইনে ফেসবুক, ই-মেইল ও ম্যাসেজের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম সেলিম
প্রতিনিধি, গাইবান্ধা
০১৭৭২-৮০১৭৩৪