স্টাফ রিপোর্টারঃ কাজল
হিরো আলমের শিক্ষা কিংবা রূপ,টাকা,পয়সা, খ্যাফতি প্রভাব—কিছুই ছিলো না। একজন নিম্নবিত্ত মুসলিম-আয়ের পরিবারে জন্ম তার। ছোটবেলায় সে-একবেলা খাবার খেতে পারলে আর দুইবেলাই না খেয়ে থাকতে হয়েছিল, তার বাবা একজন-চানাচুর বিক্রয় করে সংসারের খরচ চালাতেন। বিভিন্ন এলাকা,বা স্কুল/ কলেজ হাট বাজারে ঘুরে-ঘুরে রাতে বাসায়/বাড়ীতে ফিরেএসে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করা ছিলো হিরো আলমের বাবার নিত্যদিনের কাজ/ কর্ম।
ক্লাশ থ্রি/ফোরে পড়ুয়া অবস্থায় একসময় ঝর-বৃষ্টি রাতে হিরো আলমের মাকে মেরে আলমকে সহ ঘর থেকে বের করে দেয়। ঐরাতে হিরো আলম মায়ের সাথে চলে যায় নানার বাড়ি। ঐদিন পর্যন্ত সমাপ্ত ঘটে হিরো আলমের শিক্ষা জীবন।এর কিছু দিন অতিবাহিত যাওয়ার পর , বেছে নিয়েছিল সিডি, ক্যাসেটের ব্যবসার দোকান, সে ব্যবসার সামান্য কিছু টাকা উপার্জনেই পরিবার চালিয়ে-ছিলেন হিরো আলম। স্বপ্ন ছিলো তার অনেক বড় পরী-কল্পনা আকাশ মাটি, অভিনয় করবে-চলচ্চিত্র অভিনেতা বড় পদ্মার নায়ক।
অভিনয় করার জন্য কত-শতবার পরিচালকের কাছে গিয়েছিল, তথ্য শতবার হিরো আলমকে অপমান, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ও দূর-দূর বিদায়ই করে দিয়েছিল। এরপর ও হিরো আলম দেখেন থেমে যায়নি। ধৈর্যের সাথে, নিজের স্বপ্নপূরণ করতে সে তার নিজের মতো করে এগিয়েছিল। হিরো আলম একাই লড়াই করে চলেছে,ও আমরা বলতে পারি সফলও হয়েছে আলম, এখন হয়ত আপনি/আমি তাকে ঘৃণা করতে চাইছি /করে থাকি, মূর্খ বলে গালাগালি পারি/ করেন এতেও কোন সমস্যা মনে করেনি, কিন্তু এর আগে আমার কিছু প্রশ্ন- রয়েগেল উত্তর দিন—
আপনি/আমি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় বারংবার ট্রল, মানুষের হাসা -হাসির পাএ শিকার হতাম তাহলে, কখনও এভাবে টিকে থাকতে পারতাম না? কি তার আগেই আমরা মানসিক-ভাবে ভেঙে পড়তাম।
কত-শত মানুষের কাছে হিরো আলম তুচ্ছতাচ্ছিল্য, গালমন্দের শিকার, মানসিক নির্যাতিত-হওয়ার পরও হিরো আলম নিজের স্বপ্নপূরণ করতে এভাবে লড়াই করে চলে আসছে এ পর্যন্ত?
আমি মনে করি আপনারা কেউ আমার প্রশ্নর-উত্তর – দিতে পারবেন বলে মনে হয় না আমার। কিন্তু আপনারা দেখেন হিরো আলম কিন্তু পেরেছে। ০০- থেকে নিজের নাৃ হিরো আলম বানাতে পেরেছে।
এখন হিরো আলম কোটিপতি তালিকায় তার নাম উঠেছে, এক সময় যাঁরা তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো তারাই এখন তাকে ব্যবসার জন্য কাছে ডাকছে।
হতদরিদ্র গরিব-দুঃখীদের পাশে বন্যাসহ বিভিন্ন দূর্যোগে হিরো আলম মানবতার,লাইনে দাঁড়িয়ে তার সাধ্যমতো মানুষকে কিছু না, কিছু সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আসছেন। আমরা যাঁরা ফেসবুকে হাই-প্রোফাইল লেকচার দিই, তারা মানুষের জন্য কী সাহায্য সহযোগিতা করেছেন বা করেছি!
হিরো আলম ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে ,কত সুন্দর/ চমৎকার ভাবে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে নানান-রকমের কটাক্ষের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে থাকেন। তাই আমি বলব শিক্ষিত সমাজকে- হিরো আলম এর কাছ থেকে অনেক কিছু শিক্ষনীয় আছে। তাই আমি কিছু নমুনা স্বরূপ —দেখুন?
এক সময় টুয়েন্টিফোর চ্যানেল একজন উপস্থাপক হিরো আলমকে প্রশ্ন করেছিল। আপনি এত কিছু চাপ সামাল দেন কী ভাবে?
সুন্দর-ভাবে হিরো আলম উত্তর দিয়েছে, আপনি দেখেন আমি গান গাইতে পারি না, অভিনয় করতে পারি না। আমি জানেও এরপরও আমি আমার মনের আনন্দের জন্য অভিনয় করি। আমি বেশ কিছু সিনেমা ও বানিয়েছি। ঐসব সিনেমায়ই আমি গানের জন্য যখন বিভিন্ন গীতিকার/ সুরকার, শিল্পীদের কাছে গান চাইতাম, ওনারা আমাকে দিতেন না। ওনারা বলতেন, তোমাকে গান দিলে আমাদের মানসম্মান ক্ষুন্ন হবে। ঐসব কথা শোনে তখন আমি নিজেই বাধ্য হয়ে গান গাওয়া শুরু করেছি।
গাইতে পারি না আমি তবুও জানি। উপরওয়াল আমাকে গানের কন্ঠ দেননি। তাই বলে কি আমার আনন্দের জন্য গাইতে পারব না?
কিছুদিন আমাকে আগে একজন সাংবাদিক জিজ্ঞেস করছিল, আপনার কী যোগ্যতা আছে আপনি এমপি নির্বাচন করার?
হিরো আলম জবাব দিয়েছেন কি জানেন? তবে শুনুন – আপনি বলুন-নায়িকা মাহিয়া মাহি চেষ্টা করল, ক্রিকেটার মাশরাফি নির্বাচন করল, মমতাজ নির্বাচন করল, তাদেরকে কখনো এই প্রশ্ন করেছেন, তাদের কী যোগ্যতা আছে এমপি নির্বাচন করার! তারা তো ক্রিকেট খেলেছে, কেউ অভিনয় করেছে, কেউ গান গাইছে। আমার পড়ালেখা নেই কিন্তু আমার স্বপ্ন এবং ইচ্ছে আছে মানুষের সেবা করার। আমি আমার সাধ্যমতো মানুষের সেবা করার /চেষ্টা করব।
কয়দিন আগে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থীতা বাতিল করেছিলেন, কিন্তু হিরো আলম থেমে যাননি। লড়াই করে প্রার্থীতা ফিরে এনেছেন এবং বগুড়া উপনির্বাচনে ৬ আসনের একতারা মার্কায়ে-এনে নির্বাচন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
আমি নিশ্চিত গায়িকা মমতাজ কিংবা যে শিক্ষিত এমপি হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে, তাদের চাইতে শত-গুনে হিরো আলমের এমপি হওয়ার যোগ্য রয়েছে!
আপনি যতই ঘৃণা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করুন না কেন? কিন্তু এই হিরো আলম থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিক্ষা নিতে হবে। কেমন করে হিরো আলম একাই লড়াই চালিয়ে আসছে, কিভাবে নিজের স্বপ্নপূরণে করতে হয়। তা হিরো আলমের ভালো করে জানা আছে। হিরো আলমের জীবনের পিছনের দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন!
তাই আমি বলছি অন্যরে পিছনে না লেগে-নিজে কি করবেন, তা ধৈর্য্য সাথে স্বপ্ন পূরণ করে যেতে হবে, পিচের লোকে কে কি বললো ভাবা-ভাবি চলবে না। নিজেকে বা নিজের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে যেতে-যেতে হঠাৎ এক সময় আল্লাহ তায়ালা সফলতা অর্জনে সাহায্য করবেন।।