নেত্রকোনা প্রতিনিধি তানভীর হোসেন।
নেত্রকোনা কেন্দুয়ার বিদ্যাবল্লভে রওশন ইজদানী একাডেমীতে (উচ্চ বিদ্যালয়) পাঁচ পদে ৬০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যসহ পরীক্ষার আগের দিন প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আল আমিন ভূঁইয়া এবং প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবীরের বিরুদ্ধে।
শনিবার বেলা ১১টায় নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একইদিন সকালে তা স্থগিত করেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক।
সূত্র জানায়, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে জানতে পারেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির সদস্য আশরাফুল আলম ও মো. মাসুদ তালুকদার এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আহসানুল কবীর ওরফে তাহের মাস্টার।
পরে তারা তিনজনের স্বাক্ষরিত ৬০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম তুলে ধরে পরীক্ষা বন্ধের জন্য ডাকযোগে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ চলতি মাসের এক তারিখ প্রেরণ করেন
অভিযোগকারীদের একজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তাহের মাস্টার জানান, কম্পিউটার পদে তৌহিদ, আয়া পদে নার্গিস, অফিস সহকারী পদে মিজান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে তরুণ, গেইট কিপার পদে সুমন এদের থেকে ৫০-৬০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
এই পাঁচজনকে নিয়োগসহ পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র দিয়ে দেওয়া হবে এলাকায় প্রচার করেন সভাপতি।
তিনি আরও জানান, নিয়োগ বাণিজ্যে পদভেদে কারও কারও কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ করে টাকা গ্রহণ করেন অভিযুক্তরা। সুন্দর ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে মেধাবীরা স্কুলের নিয়োগ প্রাপ্ত হোক। অন্যথায় নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল আমিন ভূঁইয়া বলেন, আয়া পদে একটা মেয়ে আছে সে আট বছর যাবৎ মাস্টাররোলে কাজ করছে। এছাড়াও আরও দুজন মাস্টাররোলে কর্মরত আছেন। আরেকজন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা কবি রওশন ইজদানীর নাতি মিজান। এ জন্য এলাকার সবারই ধারণা তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আর যিনি (তাহের মাস্টার) অভিযোগ করেছেন তিনি স্কুলের একজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং তার ছেলেও একজন চাকরি প্রার্থী।
এ ছাড়া এ নিয়োগে আমাদের নেতৃবৃন্দরাও তদবির করেছেন। উপর থেকে নিচ মহল পর্যন্ত অনেকের সুপারিশও আছে। আমরা কাউকে নিয়োগ দিচ্ছি বা দেব এ কথা কাউকে বলি নাই।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর গফুর বলেন, নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নাই। নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে ব্যক্তি নির্বাচনসহ অন্যান্য যাবতীয় কার্যক্রম স্কুলের সভাপতি করে থাকেন।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।