সাদিয়াত হোসেন জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল।
টাঙ্গাইলের কলিহাতীতে একটি অসাধু দালাল চক্র পুলিশ প্রশাসনের ভামমূর্তি ক্ষু্ন্ন করার লক্ষ্যে মামলায় জরিত কিছু ব্যক্তিদের নাম থানা থেকে কর্তন করবে বলে গোপনে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ ও এলাকায় গুঞ্জনেরে সৃষ্টি হয়েছে । স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ঘটনা মিমাংসা করে দিবে এবং মামলায় জরিত কিছু সংখ্যক আসামীদের নাম কর্তন করবে বলে গোপনে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ সহ এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকমুখে নানা ধরনেরে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে । এ-হত্যা মামলায় সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার নিয়ে এলাকাবাসীর অনেকেই সন্দ্রহ প্রকাশ করছে ।
উল্লেখ্য গত (০৩ মে মঙ্গলবার) কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের ঝাটিবাড়ী গ্রামে গরুর ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয় । স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, গরুর ঘাস কাটা কেন্দ্র করে ঝাটিবাড়ী গ্রামের আঃ করিম ও একই গ্রামের স্বপেনের ছেলে ইকবাল ও মিলনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ৮টায় স্বপেন ও তার ছেলেরা পার্শ্ববর্তী ধুনাইল গ্রামের শাজাহান নেতৃত্বে ঝাটিবাড়ী গ্রামের আঃ করিমের বাড়ীতে হামলা চালায়। হামলায় আঃ করিম, তাজিম উদ্দিন, কাজিম উদ্দিন, ফজলুল হক, রুস্তম, শাজাহান ও দেলোয়ার সহ উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়।
আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৫ জনকে ভর্তি করে রুস্তম ও শাজাহানকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুস্তমের মৃত্যু হয়।
সংর্ঘষের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বাংড়া ইউনিয়নের ধুনাইল গ্রামের শাহজাহানের ছেলে উজ্জ্বল (২০), রকিবুল ইসলামের ছেলে আলহাজ (২৫), মৃত ইন্নছ আলীর ছেলে শামসুল (৫৫), মৃত রবির ছেলে দেলোয়ার (৫০) এবং ঝাটিবাড়ী গ্রামের স্বপেনের ছেলে ইকবাল (২২) ও মিলন (২০) ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (০৩ মে) রাতে নিহত রুস্তমের ফুফু রিনা বেগম বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন (কালিহাতী থানার এফআইআর নং-৫/৮১, তারিখ- ০৩মে,২০২২ ধারা-১৪৩/৩৪১/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬(২) পেনাল কোড-১৮৬০ । রুস্তম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় সূংযুক্ত মামলা সংক্রান্তে ইতোমধ্যে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা সংযোজন করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হয় । এজাহার সূত্রে জানাযায়, উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের ঝাটিবাড়ি গ্রামের ১. ইকবাল (২২), পিতা- স্বপেন, ধোনাইল গ্রামের ২. উজ্জল (২০), পিতা-শাহজাহান, ৩. আলহাজ (২৫) পিতা-রফিকুল ইসলাম ৪. শামছুল (৫৫) পিতা-মৃত ইন্নছ আলী ৫. ঝাটিবাড়ি গ্রামের মিলন (২০) পিতা-স্বপেন ৬. সুজন (২১) পিতা-রবি ৭. স্বপেন (৪৫) পিতা-মৃত সোনাউল্লাহ ৮. আলফাজ (৫০) পিতা-মৃত সোনাউল্লাহ ৯.জাহিদুল (২০) পিতা-আলফাজ ১০. রবি (৫৫) পিতা-মৃত হোসেন আলী ১১. ধোনাইল গ্রামের জুয়েল (২৮) পিতা-শামছুল ১২. আবু বক্কর (৩২) পিতা-আঃ খালেক ১৩. আঃ বারেক (২৮) পিতা-আঃ খালেক ১৪. হারুন (২৫) পিতা-আঃ খালেক ১৫. দেলোয়ার (৫০) পিতা-মৃত রবি ১৬. ঝাটিবাড়ি গ্রামের হাশেম (৩৫) পিতা-মৃত পাষান আলী ১৭. ধোনাইল গ্রামের আবির (২৪) পিতা-দেলোয়ার ১৮. নস্কর আলী (৫৫) পিতা-মৃত হানিফ ১৯. সুমন (২৮) পিতা-কছিম উদ্দিন ২০. ঝাটিবাড়ি গ্রামের রায়হান (২২) পিতা-নাছির ২১. মাসুদ (২০) পিতা-আঃ মালেক সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় ।
এবিষয়ে স্থানীয় বাংড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আঃ ছামাদ ও নাম না প্রকাশের শর্তে নিহত রুস্তমের স্বজনরা জানান, আশরাফুল কোচিং সেন্টারের পরিচালক আশরাফুল, ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ছোরহাব (টাকি), রশিদ মেম্বার (সাবেক), ঠান্ডু, আনিছ ও খালেক গংদের যোগসাজসে মামলার আসামীদের পরিবারের থেকে মোটা অংকের অর্থ যতদূর জানি এবং শুনেছি প্রায় ৩১ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছে এবং প্রথম দিনে একলক্ষ ষাটহাজার টাকা ও পরবর্তীতে দশ লক্ষ টাকার মতো উত্তোলন করে বাংড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শফির নিকট হস্তান্তর করেছে এবং বাকী টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে বলেও শুনেছি । এঘটনায় বাংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফি লক্ষ লক্ষ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে । লোকমুখে শুনেছি তিনি দায়িত্ব নিয়েছে ঘটনা মিমাংসা করে দেওয়ার । কিন্ত আমরা মিমাংসা করার বিষয়ে কিছু জানি না । এ-টাকা নিয়ে তিনি থানা থেকে মামলায় জরিতদের নাম কেটে দিবে এমামলায় কিছু হবে না সহ এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে । অন্যদিকে মামলার আসামীদের থেকে হুমকি আসছে টাকাই তো যাবে । সবশেষে স্বজনরা জানান আমরা রুস্তম হত্যার ন্যায় বিচারের দাবি করছি ।
স্থানীয় মাতবর আঃ কদ্দুস বলেন, মামলার সকল আসামীরা বাড়িতে অবস্থান করছে । তারা বলছেন মামলা কিনে নিয়েছে আর কি করতে পারবেন? সহ নানা অশালীন ও অসামাজিক মন্তব্য নিহম রুস্তমের পরিবার পরিজনদের বলতেছে যা বর্তমান সময়ে সত্যিই বেদনাদায়ক । মামলায় নাম কর্তনের জন্য অর্থ লেনদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ইছাপুরের শফি স্থানীয় (উপরোক্ত উল্লেখিত) কিছু অসাধু লোকজনের যোগসাজসে লাখ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে । আমরা সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে রুস্তম হত্যার আসামীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি ।
লেনদেনের বিষয়ে অভিযুক্ত কোচিং শিক্ষক আশরাফুল ও ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ছোরহাব (টাকি) এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তারা বলেন মামলার নাম কাটার বিষয়ে তারা কিছু জানেন না । অন্যদিকে সরেজমিনে আঃ খালেকের বাড়িতে তথ্যের জন্য যাওয়া হলে সংবাদকর্মী আসছে জেনে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ।
মামলার বাদী রিনা বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার স্বামী ফোন রিসিভ করে বলেন, মামলা মিমাংসা হবে বলে এরকম ধরনের কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত আমরা নেইনি । মামলা আইনের গতিতেই চলতেছে এবং চলবে ।
এবিষয়ে মুঠোফোনে বাংড়া বাংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভা